ইলেকট্রনিক কমার্স কে সাধারণ অর্থে ই-কমার্স ( e-commerce ) বলা হয়। ইন্টারনেট বা অন্য কোন কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে কোন পণ্য বা সেবা ক্রয় বিক্রয়ের কাজটিকেই ই-কমার্স বলে। অন্য কেউ সেবার উপাদান মার্কেটিং, ডেলিভারি ,সার্ভিসিং, মূল্যপরিষদের অনলাইন প্রতিক্রিয়াকে সামগ্রিকভাবে ইলেকট্রনিক কমার্স বলে। ইন্টারনেটের বিস্তৃতির সাথে সাথে ইলেকট্রনিক উপায় বাণিজ্যের পরিমাণও দিনকে দিন বেড়েই চলছে। আজকাল নানা ধরনের বাণিজ্যের কাজকর্ম এ উপায়ই সেরে ফেলা হচ্ছে। ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার, সাপ্লাই চেইনে ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ইন্টারনেট মার্কেটিং, অনলাইন ট্রানজেকশনে প্রোসেসিং, ইলেকট্রনিক ডেটা ইন্টারচেঞ্জ(ইডিআই), ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এবং অটোমেটেড ডাটা কালেকশন সিস্টেম সমূহের উদ্ভাবন ও ব্যাপক প্রচলনের ফলে ই-কমার্সের প্রসার ও ঘটেছে দ্রুত। আধুনিক ইলেকট্রনিক কমার্স মূলত ওয়ার্ল্ড ওয়াইইড ওয়েব কে ব্যবহার করছে। অন্ততপক্ষে অর্থ লেনদেনের কিছু কিছু ক্ষেত্রে ই-কমার্স এর উপর লোকজন অনেকটা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
১. দ্রুত ক্রয়/ বিক্রয় পদ্ধতি, সহজে পণ্য খুঁজে পাওয়া যায়।
২. ব্যবসা পরিচালনায় খরচ কমায়।
৩. ভৌগলিক সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে সহজে ক্রেতার কাছে পৌঁছে যায়।
৪. পণ্যের গুণগতমান উন্নয়ন করে।
৫. কম খরচে উন্নয়ন সেবা প্রদান করে।
৬. বাহ্যিক সেটআপ ছাড়াই ব্যবসা করা যায়।
৭. সহজেই ব্যবসা শুরু করা যায় এবং ব্যবস্থাপনা করা যায়।
৮. ক্রেতা দৈহিকভাবে না গিয়ে বিভিন্ন প্রোভাইডারদের প্রোডাক্ট নির্বাচন করতে পারে।
১৯৭১ বা ১৯৭২ : উন্নত গবেষণা প্রকল্প এজেন্সী নেটওয়ার্ক (আরপানেট) ব্যাবহারে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টারসমূহ এবং ইন্সটিটিউটসমূহ ও ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি-র শিক্ষার্থীদের মধ্যে গাঁজাপাতার ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে এই রূপ বাণিজ্যের সূত্রপাত ঘটে। যাকে জন মার্কফ তার বই 'ডোরমাউস কি বলেছে' তে ই-কমার্সের চূড়ান্ত আইন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
ব্যবসা-থেকে-ব্যবসা (B2B):
ব্যবসা-থেকে-ব্যবসা ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে। ৮০ শতাংশের (৮০%) মত ইলেকট্রনিক কমার্স ব্যবসা-থেকে-ব্যবসা প্রকার এর অন্তর্ভুক্ত।
ব্যবসা-থেকে-গ্রাহক (B2C) ব্যবসা-থেকে-গ্রাহক ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকের মধ্যে। এই প্রকারে দ্বিতীয় সর্বাপেক্ষা বেশি ইলেকট্রনিক বাণিজ্য সম্পাদন হয়ে থাকে।
ব্যবসা-থেকে-সরকার (B2G):
ব্যবসা-থেকে-সরকার ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রীয় খাতের মধ্যে। এটি সাধারনত ব্যবহৃত হয়ে থাকে রাষ্ট্রীয় কেনা/বেচা, লাইসেন্স সংক্রান্ত কার্যাবলী, কর প্রদান ইত্যাদি ক্ষেত্রে।
গ্রাহক-থেকে-গ্রাহক (C2C):
গ্রাহক-থেকে-গ্রাহক ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় একাধিক ব্যক্তি ও গ্রাহকের মধ্যে। ইলেকট্রনিক বাজার ও অনলাইন নিলাম এর মাধ্যমে সাধারণত এই ধরনের বাণিজ্য সম্পাদিত হয়।
মোবাইল কমার্স (m-commerce):
মোবাইল কমার্স ইলেকট্রনিক কমার্স সম্পাদিত হয় তারবিহীন প্রযুক্তি যেমন মোবাইল হ্যান্ডসেট বা পারসোনাল ডিজিটাল অ্যাসিস্টেন্ট (PDA) এর মাধ্যমে। তারবিহীন যন্ত্রের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদানের গতি ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির সাথে সাথে এই ধরনের বাণিজ্য জনপ্রিয়তা লাভ করছে।
গ্রাহক থেকে সরকার (সি টু জি):
কখনো সরসরি জনগনের কাছ থেকে সরকার বিভিন্ন সেবার বিনিময় ফি বা কর নিয়ে থাকে। যখন এর মাঝে কোন মাধ্যমৈ থাকেনা তখন এটা গ্রাহক থেকে সরকার পক্রিয়া বলে বিবেচিত হয়। ডিজিটাল গভর্নেন্স-এর আওতার এ ধরনের সেবা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।