ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিপুল পরিবর্তন আনা সম্ভব। বিশ্বের অনেক দেশই এখন নিজেদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল করে ফেলেছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। দেশের স্বাস্থ্যসেবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করছে সরকার। আর তার সুবিধা পাচ্ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা।
২০০৯ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম-এমআইএস বাংলাদেশের উপজেলা পর্যায়ে সব স্বাস্থ্য পয়েন্টে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করে। এম-হেলথের মাধ্যমে সব জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০০৯ সালে বাংলাদেশে ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা বা জিআইএস প্রবর্তন করে। এর ফলে স্বাস্থ্যসেবা ও অন্য সুবিধাদি কোথায়, কোন অবস্থানে রয়েছে তা জানা যায়। এখন প্রতিটি বিভাগীয় ও জেলা স্বাস্থ্য কার্যালয়ে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএস ডিভাইস সরবরাহ করা হয়েছে। তা দিয়ে কোনো রোগের নজরদারি এবং সেবাদান পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
২০১০ সালে ইউএস এইডের অর্থায়নে দেশে মেসেজ সার্ভিসের মাধ্যমে গর্ভাবস্থাকালীন পরামর্শ সেবা চালু করা হয়। এ সেবাটি সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৪ ও ৫ অর্জনে অবদান রেখেছে। ১৯৯৯ সালে পক্ষাঘাত পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) প্রথম টেলিমেডিসিন সেবা চালু হয়। দেশের ৮০০ সরকারি হাসপাতালে এসএমএসের মাধ্যমে অভিযোগ পাঠানোর পদ্ধতি ডিসপ্লে করা হয়েছে। এসব এসএমএস একটি ওয়েব পোর্টালে আসে এবং এ অভিযোগ গ্রহণ করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।
দেশের সব নাগরিকের স্থায়ী ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড তৈরির কাজ চলছে। এর উদ্দেশ্য রোগীর একটি সমন্বিত স্বাস্থ্য রেকর্ড রেখে সেবার মান উন্নত করা। এ প্রকল্পেও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে ৩০০টিরও বেশি সরকারি হাসপাতাল স্বয়ংক্রিয় করার পরিকল্পনা করছে। এছাড়া কিছু হাসপাতাল অটোমেশন করারও পরিকল্পনা চলছে।
এভাবেই দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে উন্নত করার জন্য ডিজিটালাইজেশনের চেষ্টা করা হচ্ছে। যার শুরুটা হয়েছে অনেক আগে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এসব তথ্যই বলছে, ধীরে ধীরে দেশ সেদিকেই এগোচ্ছে। আর দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে পুরোপুরি ডিজিটাল করতে পারলেই বলা যাবে দেশের স্বাস্থ্যসেবা স্মার্ট হিসেবে গড়ে উঠল।