সুশাসন ও ই-গভর্নেন্স-এর পারস্পরিক সম্পর্ক খুবই নিবিড়। ই-গভর্নেন্স নিম্নলিখিত উপায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলো নিম্নরণ-
১. দ্রুত যোগাযোগ: সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ স্থাপন ই-গভর্নেন্স-এর আওতাধীন যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সাথে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে।
২. স্বচ্ছতা আনয়ন: ই-গভর্নেন্সে স্বচ্ছতার বিষয়টিকে বড় করে দেখা হয়। সরকার কী কী কাজ করছে, কেন করছে, কী কী মূলনীতির ওপর সরকার সিদ্ধান্ত বা নীতি প্রণয়ন করছে তা ই-গর্ভনেন্স তা জানাতে সাহায্য করে।
৩. দক্ষ ও সাশ্রয়ী পদ্মা: ই-গভর্নেন্স-এর চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো একটি দক্ষ ও সাশ্রয়ী পন্থায় জনগণের নিকট সেবা পৌঁছানো যা সময়, শ্রম ও অর্থের অপচয় কমিয়ে দেয়।
৪.রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরি; রাজনৈতিক সচেতনতা, জনগণের সংশ্লিষ্টতা ও আগ্রহ বাড়াতে ই-গভর্নেন্স বা ই-সরকার কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। ৫.তথ্যের সহজলভ্যতা: ই-গভর্নেন্স তথ্য প্রাপ্তি যেকোনো প্রক্রিয়াকে সহজ করে দিতে পারে।
৬. জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ: ই-গভর্নেন্সের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সারাদেশের মানুষ রাজনীতিবিদ ও সরকারি চাকরিজীবীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে ।
৭. অবাধ ও সার্বজনীন তথ্য প্রবাহ: ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থায় ধনী-গরিব, ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি নির্বিশেষে সবার জন্য সরকারি তথ্য প্রাপ্তির সুযোগ উন্মুক্ত থাকে যা প্রকৃত সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করে।
৮. আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হ্রাস: ই-গভর্নেন্স আমলাতান্ত্রিক জটিলতার দুর্ভোগের বা হয়রানির হাত থেকে জনগণকে রেহাই দেয়। কেননা এর ফলে সরকারি অফিসে গিয়ে তথ্যের জন্য দিনের পর দিন ঘুরতে হয় না বা ঘুষ দিতে হয় না। ঘরে বসেই জনগণ এগুলো জানতে পারে।
বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২০০৯ সালে ঘোষিত ভিশন-২০২১ এর প্রধান লক্ষ্যই হল সরকারি সেবা ও শাসনব্যবস্থাকে ডিজিটাল করা। সরকারি সেবা জনগণের দ্বারে পৌঁছে দেবার জন্য স্থানীয় সরকারের সর্বনিম্ন স্তর ইউনিয়ন পরিষদে একটি ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র বা ডিজিটাল সেন্টার চালু করেছে। তাছাড়া সরকারি সকল কার্যালয় থেকে দ্রুত তথ্য পাওয়ার জন্য একজন করে তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। দ্রুত তথ্য পাওয়ার জন্য প্রত্যেকটি সরকারি কার্যালয়ের মৌলিক কিছু তথ্য ওয়েবসাইটে অন্তর্ভুক্তকরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরের আওতায় শিক্ষকদের পেনশন ভাতা প্রদান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পিআরএল এবং পেনশনের আবেদন প্রক্রিয়ার ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। ই-গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠিত হলে সর্বাগ্রে প্রাধান্য পাবে সাধারণ নাগরিক। এটি চার ধরনের কাজ করে যার কেন্দ্রে থাকে নাগরিক সেবা। এ কাজগুলো হচ্ছে ব্যক্তিকে অবগতকরণ, ব্যক্তিকে প্রতিনিধিত্বকরণ, ব্যক্তিকে পরামর্শ প্রদান এবং ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্তকরণ।