কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন বা কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কক্সবাজার জেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দের পাড়ায় অবস্থিত একটি ছয়তলা বিশিষ্ট রেলওয়ে স্টেশন। এটি বাংলাদেশের প্রথম আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন। এটি দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথের শেষ স্টেশন। স্টেশনটি একটি ঝিনুক আকৃতির, যার মোট আয়তন ১ লাখ ৮৭ হাজার বর্গফুট। স্টেশনটিতে ৬টি প্ল্যাটফর্ম, টিকিট কাউন্টার, রেস্তোরাঁ, হোটেল, শপিংমল, শিশুযত্ন কেন্দ্র, লকার, ডাকঘর, কনভেনশন সেন্টার, তথ্যকেন্দ্র, এটিএম বুথ এবং প্রার্থনার স্থান রয়েছে।
কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনের ইতিহাস শুরু হয় ২০১৭ সালে। সে বছর বাংলাদেশ সরকার চট্টগ্রাম জেলার দোহাজারি থেকে রেললাইন বর্ধিত করে বান্দরবান জেলার গুনধুম পর্যন্ত নেওয়ার পরিকল্পনা করে। এই মহাপরিকল্পনার আওতায় রামু রেলওয়ে স্টেশন থেকে আরেকটি রেললাইন পর্যটন বিকাশে কক্সবাজার জেলা পর্যন্ত নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং কক্সবাজার শহরে একটি রেলওয়ে স্টেশন তৈরির প্রস্তাব করা হয়। ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। স্টেশনটি নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকারের বাজেট ছিল ৫০০ কোটি টাকা। ২০২২ সালের মধ্যে স্টেশনটি নির্মাণের কথা থাকলেও বিভিন্ন কারণে তা পিছিয়ে যায়। অবশেষে ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন উদ্বোধন করেন। কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনটি বাংলাদেশের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন রেলওয়ে স্টেশন। স্টেশনটিতে একটি ৪ তলা বিশিষ্ট ভবন রয়েছে। ভবনটির আয়তন প্রায় ১০,০০০ বর্গফুট। ভবনের মধ্যে রয়েছে যাত্রীদের জন্য রেলওয়ে বুকিং কাউন্টার, টিকিট কাউন্টার, রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে, ওয়েটিং রুম, টয়লেট ইত্যাদি। ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন থেকে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত একটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। ট্রেনটির নাম হলো "কক্সবাজার এক্সপ্রেস"। কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনের উদ্বোধন বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। স্টেশনটি চালু হওয়ার ফলে কক্সবাজারে পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।